শুক্রবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

নীরব (৩য় পর্ব)


পূর্ব প্রকাশের পর

আবিরকে ফোন দিয়ে বলতে হবে সবাইকে নিয়ে এক্ষুনি চলে আসে যেন।কিন্তু ফোনে ত ব্যালেন্স নাই।আর টেলিফোন এ কিসের সমস্যা হচ্ছে আম্মু বললো।
আম্মুর ফোন থেকে আবিরকে কল দিয়ে জানিয়ে আসি।আম্মুর রুমে গেলাম..
_আম্মু রেডি হচ্ছো! কোথাও যাবে নাকি?
_হ্যা,তোর ছোট ফুপিরা ৪দিন হলো আসছে,এখনো দেখা করিনি,ওখানে যাচ্ছি
_ওহ কে কে আসছে?
_তোর ফুপি,অহনা আর মোহনা
_আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে আসো,আমি ওই দিকেই যাচ্ছি,নামিয়ে দিয়ে যাবো
আম্মুকে ফুপির বাসার সামনে নামিয়ে দিলাম,অনেক জোর করলো সাথে যেতে,কিন্তু আজ আমার সময় নেই তাই গেলাম না।
ফুপিরা বাইরে থাকে,ফ্রান্সে পুরো পরিবার।আমি এখনো দেখিনি ওদের।উনাদের দুটো মেয়ে অহনা মোহনা,সেটাও জমজ।দেখা করা উচিত ছিল।আম্মুকে বলে দিলাম ফুপিকে আমার সালাম পোঁছে দিতে

ফোনে টাকা লোড দিতে হবে। ফুপির বাসার সামনেই দোকান পেয়ে গেলাম।
আবির ও সাথে সাথে ফোন দিল
"হে রে আমরা সবাই আসছি,রিয়া বাদে,তুই কোথায় আছিস?'
'আম্মুকে ফুপির বাসায় নামিয়ে দিলাম তাই দেরি হলো একটু, এক্ষুনি আসছি'
গিয়ে দেখি সবাই চলে আসছে।খাবারের অর্ডার দিলাম।
সব ফ্রেন্ডস রা এইবার আমার পিছনে -নীরব,হয় প্রেম কর নইলে বিয়ে কর,পড়াশুনা শেষ আর কোনো কাজ নেই
আমি কি বলবো খুঁজে পাচ্ছিনা তাই আবিরকে বললাম 'তুই কিছু বলে দে তো "
কিন্তু আবির ও এইবার দল পাল্টে নিল "আমি কি বলবো,সবাই ঠিক ই বলছে,বিয়ে করে যৌতুক নিয়ে ব্যবসা শুরু কর"
বলেই সবাই হাসতে লাগলো।
ক্রিং ক্রিং ফোন বেজে উঠলো আমার।কিন্তু নাম্বার টা অচেনা
আবির বললো, 'রিসিভ করে দেখতো বলতে না বলতে কোন ফুল পরী কল দিল তোকে"
আমি কিছু বললাম না,রিসিব করলাম কল টা...
_আসসালামু আলাইকুম,কে বলছেন?
_ভাইয়া,আমার নাম মোহনা
_হুম তো কাকে চাচ্ছেন?
এটা বলতেই হাত থেকে আবির ফোনটা কেড়ে নিল,এই দে তো দেখি কার সাথে এত কথা!
_এই যে হ্যালো, আমি ফোনের মালিকের বন্ধু,কি দরকার বলুন?
মেয়েটি বোধহয় লজ্জা কিংবা সংকোচে পড়ে গিয়েছিল
_ইয়ে মানে,আপনার বন্ধুকে ফোন টা দিন
আবির ও নাছোড় বান্দা,ফোন আমাকে দিবেনা।
_যা বলার আমাকে বলুন,ও এখন ব্যস্ত আছে
_মানে,একটু আগে আমার ফোনে লোড দেয়ার জন্যে দোকানে ২০০ টাকা দিয়ে আসছি কিন্তু সেটা ভুলে আপনার বন্ধুর ফোনে চলে গেছে
শুনা মাত্রই আবির মেয়েকে লাইনে রেখেই বলতে লাগলো 'কি রে দোস্ত,মেয়ে তো আগেই তোকে যৌতুক পাঠিয়ে দিচ্ছে'
সবাই মজা করতে লাগলো। "এসব কি বলছিস,দে ফোন দে আমার কাছে,দেখি কি হয়েছে?"
ফোন নিয়ে নিলাম ওর থেকে।
_আপু বলেন কি হয়েছে?
_আপনার নাম্বারে একটু আগে ভুলে ২০০টাকা চলে গেছে,এখন যদি টাকা টা....
_আচ্ছা, আমি চেক করে জানাচ্ছি আপনাকে
মেসেজ চেক করে দেখি সত্যিই চলে আসছে ১৯৯টাকা।আবার কল দিলাম,
_আপু, টাকা আসছে,চিন্তা করবেন না,আমি এখন বন্ধুদের নিয়ে একটা রেস্টুরেন্ট এ আসছি,যদি এখান থেকে বের হয়ে তারপর টাকাটা পাঠাই, কোনো সমস্যা হবে?
_না,ঠিক আছে
বলেই কেটে দিলাম।বন্ধুরা সবাই কিছুক্ষন মজা নিল।সাথে আবিরও,ও জানে তেমন কোনো ব্যাপার নেই মেয়েটির সাথে তবুও মজা করে মজা নিচ্ছে...
বাসায় ফিরলাম সন্ধ্যার একটু পর।আম্মু তখনো আসে নি।আব্বুকে কল দিলাম, বললো অফিস থেকে ফেরার পথে আম্মুকে নিয়ে ফিরবে।
বিছানায় শোয়া মাত্রই ঘুম চলে আসলো।
ক্রিং ক্রিং ক্রিং
ফোন টা বেজে যাচ্ছে।কয়েক বার বেজে উঠার পর আর ঘুমাতে পারলাম না।নাম্বার টা দেখে তো আমি থা হয়ে গেলাম।ইসশ কি লজ্জা! আমি একদম ভুলে গেছি!
_আপু,সরি,আমি সময়ের সাথে সাথে একদম ভুলে গেছি,এক্ষুনি পাঠিয়ে দিচ্ছি
মেয়েটি নরম গলায় বলছে,"আপনার যদি সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে পড়ে কখনো মনে করে পাঠিয়ে দিলেই হবে "
_আর লজ্জা দিবেন না প্লিজ, আমি এক্ষুনি যাচ্ছি
শুয়া থেকে উঠে দোড় দিলাম, নিজের কাছে ভাবতেই লজ্জা লাগছে,কিভাবে ভুলে গেলাম এটা! সামনের দোকান থেকে পাঠিয়ে দিলাম টাকা।বাসার গেটে এসে দেখি আব্বু আম্মু গাড়ি থেকে নামছে,আম্মু জিজ্ঞেস করেই বসলো, "এখন কোথা থেকে ফিরছিস?
'এইতো সামনের দোকান এ একটু দরকারে গিয়েছিলাম, ফুপিরা কেমন আছে?"
""সবাই ভাল আছে,তবে খুব রাগ করেছে তুমি যাও নি বলে" আব্বু বলে দিল।
রাতের খাবার শেষ করে,আম্মুর সাথে কিছুক্ষন দাদার গল্প শুনলাম। রাত প্রায় ১১:৩০ এর দিকে চোখে ঘুম ঘুম ভাব, তবুও ঘুমাতে ইচ্ছে করছে না,কি যেন টানছিল।
তবুও বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম, ঘুম চলে এলো

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন