বিকেল হয়ে গেছে,প্রায় ৩টা বাজতে চললো।কলেজ ছুটি হয় ২টায়,এখনো নীলিমার আসার কোনো খবর নাই।১০টাকার বাদাম কিনলাম,বসে খাচ্ছি...
হঠাত পেছন থেকে পিঠের মধ্যে কে যেন থাপ্পড় দিতে থাকলো,হুরতুর করে পেছনে তাকিয়ে
"এই কোন শালায় রে মারতেছে,কার এত সাহস!""
কে মারতেছে দেখেই আমার গলা শুকিয়ে গেল
ঝাল মরিচের মত তীব্র ঝাল নিয়ে আমার দিকে তাকালো নীলিমা
_কি বললা তুমি? আমি শালা?
_আরে না না তুমাকে বলি নাই
_মাত্র না বললা,আমি শুনলাম
_তুমাকে বলতে যাবো কেন সোনাপাখি? আমি ভাবছি অন্য কেউ
এইবার হাতের মধ্যে শুরু করলো থাপ্পড়
_আরেএএএএএ এটা কি শুরু করলা! মেরে ফেলবা নাকি?
_কাল সারাদিন একটা কল,মেসেজ কিচ্ছু দেও নাই কেন? তুমাকে মেরেই ফেলবো
_কাল সারাদিন খুব ব্যস্ত ছিলাম,একটু ও সুযোগ হয় নি বিশ্বাস করো
_একটা কথাও বলবো না
_আমি চুপ
_ইচ্ছে করলেই সব পারতে
_আমি চুপ
_এইবার কিন্তু গলা টিপে মেরে ফেলবো,রাগালে
_তুমিই তো কথা বলতে নিষেদ করলে
_উফফফ তুমি না! সত্যিই ইচ্ছে করছে গলা টিপে মেরে দেই
_কি ডাকাত মেয়ে রে বাবা! আমার বউটাকে বিয়ের আগেই বিধবা বানিয়ে দিবে দেখছি...
.
এইবার আমার দিকে তাকিয়ে নরম সুরে গলার মধ্যে হাত রেখে বলছে 'কি বললে তুমি? আর কে আছে আমি ছাড়া? '
এইবার আমার সুযোগ, ভাবলাম সুযোগ টা একটু কাজে লাগাই
_এই তুমি আমার গলা ছাড়ো, অন্য কেউ আছে আমার এটা জড়িয়ে ধরার
৪২০ভোল্টেজের একটা তাকানো দিয়ে আমার দিকে 'এক পা এগিয়ে দেখো তো, গলা কেটে হাতে ধরিয়ে দিবো '
'জল্লাদ মাইয়া কোথাকার!'
আজ ও দেরি করে এসেছে, ভাবলাম কোথায় আজ আমি ওকে রাগ দেখিয়ে জ্বালাতন করবো কিন্তু ও এমন মেয়ে যে ওর উপর রাগ দেখানোর সুযোগ দেয়া তো দুরের কথা, উল্টো কিছু একটা ঘটিয়ে আমার উপর ৪২০ভোল্টেজ এর একটা বড় সর ঘুর্নিঝড় চালিয়ে যাবে....
.
আরেকদিন কি হলো?
আমার জন্মদিন ছিল সেদিন।ভোর ৬টায় ফোন দিয়ে জাগালো..
_এই কোথায় তুমি? তারাতারি আসো
_তারাতারি আসবো মানে! এত সকালে কোথায় আসবো?
_এক্ষুনি ছায়ানট এ আসো,৩০মিনিটের মধ্যে
কিচ্ছু উপায় না পেয়ে উঠে রেডি হচ্ছি,কিন্তু আম্মু সব শার্ট গেঞ্জি ধুয়ে দিছে,একটা ও শুকায়নি।একটা আছে,ব্লাক কালারের।এটা যদি পড়ে যাই,নীলিমা নিশ্চিত আমার গায়ে আগুন লাগিয়ে দিবে,তবুও কোনো উপায় না পেয়ে এটাই পড়ে গেলাম। যে ভাবা সে কাজ'
.
আজ নীলিমা কে তো দারুন লাগছে,ওর গত জন্মদিনে আমার দেয়া বেগুনী জামা টা পড়ে আসছে।ও বলেছিল জামাটা কখনো পড়বেনা,ছিড়ে ফেলবে কিন্তু না আজ দেখি পড়ে আসছে।আসলে ও মুখে যাই বলুক,আমি জানি ওর রাগের মাঝেই আমার জন্য অফুরন্ত ভালবাসা,শুধু একটু কষ্ট করে আমায় সেটা খুজে নিতে হবে।
ভয়ে ভয়ে ওর কাছে গেলাম, হাতে একটা ব্যাগ নিয়ে দাড়িয়ে আছে আমার রাজকুমারী নীলিমা। কিন্তু আজ আর রেগে নেই...
_(ব্যাগ টা এগিয়ে দিয়ে,নরম সুরে বলছে নীলিমা) এই নাও,যাও ওইপাশ থেকে এই শার্ট টা পড়ে আসো,আমি অপেক্ষা করছি...
আমার প্রিয় রং বেগুনী, ও মোটেও এ রং টা পছন্দ করে না কিন্তু আজ নীলিমা আমার পছন্দের বেগুনী জামাটা পড়ে এসেছে,আর আমার জন্যে যে শার্ট সেটাও আমার প্রিয় রং এর।
আমি আমার আশা থেকেও বেশি কিছু পেয়েছি।
সারাদিন দুজনে ঘুরলাম।অবশেষে ফেরার পথে
_আচ্ছা ণীলিমা, তুমি তো এ রং টা পছন্দ করো না
এটা বলেই দেখি চোখ দুটো বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে,
থাক আর কিছু বললাম না
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন